সন্তানের মা হলে কি ভালোবাসা বারণ ?
স্বামী বাইরে থাকলে অনেক ধরণের অসুবিধার মধ্যে দিয়ে যেতে হয় মেয়েদের। বিশেষ করে যদি সেই মহিলা হয় চাকুরীজীবী এবং তার উপর সিঙ্গেল মাদার। মল্লিকা সেরকমই একজন মহিলা। মল্লিকার বয়স মাত্র তিরিশ বছর।
বর থাকে অস্ট্রেলিয়ায় কাজের সূত্রে। মল্লিকাও চাকরি করে কলকাতায়। সে চাকরি ছাড়তে চায় না। তাই বরের সাথে তার থাকাও হয়ে ওঠে না। বছরে একবার এক মাসের জন্য দেখা হয় তাদের। তাদের বিয়ে হয়েছে পাঁচ বছর হল, তিন বছরের একটা মেয়েও আছে। মেয়েটির নাম হল সুজান। সুজান থাকে মল্লিকার কাছেই।
- 24 Romantic Good Morning Status and Messages for Your Love
- শিক্ষার্থীদের জন্য ভগবদ্গীতা থেকে ১৫টি প্রেরণাদায়ক শ্লোক
- রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের প্রেমের উক্তি, Rabindranath love quotes…
- শিক্ষা নিয়ে 25 টি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের বাংলা উক্তি
- অন্ধকার থেকে আলোয় জীবনের জন্য শ্রেষ্ঠ ৩১টি প্রেরণাদায়ক বাণী
সকালে মল্লিকা অফিসে চলে যায় সুজানকে স্কুলে দিয়ে। তারপর দুপুরে স্কুল বাস সুজানকে বাড়ির সামনে নামিয়ে দেয়। সুজান বাড়ি ফিরে ফ্রিজে রাখা খাবার খেয়ে ঘুমিয়ে পড়ে। তারপর বিকেলে মল্লিকা ঘরে ফেরে এবং তারপর সে সুজানের সাথে গল্প করে, খেলা করে। আর রাতের বেলায় ভিডিও কলে মল্লিকা কথা বলে তার স্বামী পার্থর সাথে। এই হল তাদের জীবন।
দীর্ঘদিন এইভাবে একা থাকার দরুন অনেকটা শক্ত হয়েছে মল্লিকা। কিন্তু কোথাও না কোথাও একটা চাহিদা তো থেকেই যায় মানুষের মধ্যে, সেটা শারীরিকই হোক কিংবা মানসিক। ব্যস্ত শিডিউলে ভিডিও কলে আর কতটুকুই বা কথা বলা হয়ে ওঠে! আর এখানেই মল্লিকার মন যায় অপ্রতিমের উপর।
অপ্রতিম প্রতিদিন সন্ধ্যাবেলা সুজানকে পড়াতে আসে বাড়িতে। অপ্রতিমের বয়স ছাব্বিশ বছর। রোজ সন্ধ্যে সাতটার সময় সুজানকে পড়াতে আসে অপ্রতিম। নটার সময় পড়ানো শেষ হয়। প্রথম প্রথম তেমন কোন কথা হত না অপ্রতিম এবং মল্লিকার। পড়ানোর সময় মল্লিকা খাবার দিতে যায় অপ্রতিমকে। সেই ফাঁকেই দু একটা কথা হত।
সেই দু একটা কথা হতে হতে ধীরে ধীরে কথা বাড়তে থাকে। শুধুমাত্র দরকারি কথা থেকে ধীরে ধীরে পরিবার, জীবন কালক্রমে সুখ দুঃখের কথা বলতে থাকে মল্লিকা ও অপ্রতিম। তারপর নটায় সুজানের ছুটি হলেও অপ্রতিম বেরিয়ে যায়না আসছি বলে। এক ঘণ্টা মল্লিকার সাথে গল্প করে সে। মল্লিকাও বিভিন্ন ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে পরামর্শ করে অপ্রতিমের সাথে।
এইভাবে চলে কিছুদিন। এই কিছুদিনে অপ্রতিম সুজানের বাবার মতো হয়ে উঠেছিলো অনেকটা। সুজানকে ভালোবাসা, শাসন করার সম্পূর্ণ অধিকার সে পেয়েছিল মল্লিকার কাছ থেকে। ধীরে ধীরে অপ্রতিমের যাতায়াত বাড়ে।
দিনের বেলাতেও আসতে শুরু করে সে এবং সেটা সম্পূর্ণ পবিত্র এক ভালোবাসা থেকে। কিন্তু প্রতিবেশীদের এই ব্যাপারটা চোখে লাগে। তারা বিভিন্ন কথা বলতে থাকে অপ্রতিম এবং মল্লিকাকে নিয়ে। কিন্তু মল্লিকা গায়ে মাখেনা সেসব কথা। স্বামী না থাকার যে যন্ত্রণা সেটা তারা কীকরে বুঝবে? সুজানকে এই তিন বছর একা মানুষ করছে মল্লিকা। তখন তো কেউ আসেনি পাশে দাঁড়াতে। তাহলে এখন তাদের কিসের এতো দরদ?
একদিন অপ্রতিম মল্লিকার বাড়ির কাছে এসেছে সন্ধ্যাবেলা। সেই সময় তাঁকে পাড়ার কিছু ছেলে ঘিরে ফেলে। তারা বলে যে অপ্রতিমকে এখানে জেনো আর না দেখা যায়। তারা অপ্রতিমকে মারধোর করারও ভয় দেখায়। ঠিক সেই সময়েই অফিস থেকে ফিরছিল মল্লিকা।
এরকম ঘটনা দেখে সঙ্গে সঙ্গে সে অপ্রতিমের সামনে এসে বাকিদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ায় এবং তাদের কড়া জবাব দেয়। অপ্রতিম সেদিন হাঁ করে দেখেছিল মল্লিকাকে।
সে বুঝেছিল মেয়েরা ভালোবাসার সময় যেমন লক্ষ্মীর রুপ নেয় তেমন সেই ভালোবাসাকে আগলে রাখতে চণ্ডাল কালীর রুপ নিতেও পিছ পা হয় না। সেদিন মল্লিকাকে আরও বেশি ভালোবেসে ফেলল অপ্রতিম। আর মল্লিকা তো কিছু না বলেও বুঝিয়ে দিল যে সে অপ্রতিমকে কতটা ভালোবাসে।


Your article helped me a lot, is there any more related content? Thanks!