নিজেকে খুশি রাখা ও কাউকে ভালোবাসা দরকার।

akhi akter

নিজেকে খুশি রাখা ও কাউকে ভালোবাসা দরকার

ভালবাসায় জীবনের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ দিক, যা সমস্ত মানুষের জীবনের কেন্দ্র হতে পারে। ভালবাসা নিজেকে খুশি রাখার এবং অন্যদেরকে ভালোবাসার মাধ্যমে সাহায্য করার একমাত্র পথ নয়, বরং এটি একটি প্রতিস্থাপন বা পরিবর্তনের প্রক্রিয়াও হতে পারে।

নিজেকে খুশি রাখা এবং অন্যেরকে ভালোবাসার মাধ্যমে খুশি করা মৌলিকভাবে জীবনের সুস্থ এবং সাফল্যমূলক হওয়ার মাধ্যম। নিজেকে প্রতিনিয়ত নিরাপদ এবং সন্তুষ্ট রাখা জীবনের সমস্ত দিকে আনন্দ এবং সুখ যোগাযোগ করতে সাহায্য করে। নিজের মধ্যে সমস্ত সুখের উৎস খুঁজে পেতে হলে মানুষ নিজের অবস্থান এবং প্রত্যাশা সম্পর্কে সচেতন থাকতে হবে।

ভালোবাসা দরকার মানুষের মধ্যে একটি মহৎ প্রয়োজনীয়তা, যা জীবনকে স্পর্শ করে এবং অনুভূতি সৃষ্টি করে। ভালোবাসার অভাব অনেক সময় অনিশ্চিততা, বিরক্তি, এবং অসন্তোষের কারণ হতে পারে। ভালোবাসার আভাস অনেক সময় জীবনের সমস্ত ক্ষেত্রে উন্নতি, সন্তুষ্টি, এবং সুখের বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে।

নিজেকে খুশি রাখা এবং ভালোবাসা দরকার সম্পর্কে নিজের মধ্যে অবস্থান এবং পরিস্থিতি সম্পর্কে সচেতন হওয়া গুরুত্বপূর্ণ। নিজের স্বাস্থ্য ও সুখের জন্য নিজেকে সাবধান রাখা, নিজের উত্তেজনা এবং উচ্চতার সাথে সামঞ্জস্য স্থাপন করা গুরুত্বপূর্ণ।

নিজেকে ভালো অনুভব করা এবং নিজের মধ্যে ভালোবাসা বৃদ্ধি করা জীবনের সমস্ত দিকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের স্বার্থ এবং আনন্দের জন্য নিজেকে প্রতিনিধিত্ব করা জরুরি।

নিজেকে ভালো অনুভব করা এবং অন্যেরকে ভালোবাসা দেওয়া হলে জীবনের সমস্ত দিকে আনন্দ এবং সুখ অপেক্ষা করা যেতে পারে। এটি নিজের এবং অন্যের সম্পর্কে বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে, এবং জীবনকে সুখী এবং উন্নত করার একটি অমূল্য প্রকার।

ভালোবাসা এবং নিজেকে খুশি রাখা একইসাথে নিজের এবং অন্যের সাথে সম্পর্কের মান এবং গুরুত্ব স্থাপন করে। এটি জীবনের সমস্ত দিকে বিকাশ এবং উন্নতির মাধ্যমে সুখ, সন্তুষ্টি, এবং সমৃদ্ধি উপভোগ করার একমাত্র উপায়। প্রতিটি মানুষ নিজের সাথে ভালো সম্পর্ক তৈরি করে এবং ভালোবাসা দিয়ে অন্যদেরকে সাপোর্ট করে, তাদের জীবন এবং আত্মবিশ্বাস বৃদ্ধি করে তারা সমাজে অবদান রাখতে সাহায্য করে।

বাবা মায়ের বাধ্য মেয়ে শ্রীতমা। বাবা মায়ের সব কথা সে শুনে এসেছে ছোটবেলা থেকে। মনে মনে সে ভাবে যে বাবা মায়ের কথা শুনে চললেই সে জীবনে সফল হবে। পড়াশোনাতে চিরকালই ভালো সে। কিন্তু তথাকথিত ভাবে দেখতে খুব একটা ভালো নয় শ্রীতমা।

তাই প্রেম বলতে তেমন কিছুই আসেনি তার জীবনে, কারণ প্রায় সব ছেলেরাই রূপের অন্ধকারে নিমজ্জিত থাকে। কিন্তু শ্রীতমা এসব নিয়ে ভাবেওনি কখনো।

বাকি আর পাঁচ জনের মতো সেও ভালোবাসা চায়, কিন্তু শ্রীতমা ভেবেছিল যে বিয়ের পরেই তার এই স্বপ্ন সত্যি হবে। আর বাবা মেয়ের পছন্দ করা ছেলেকে বিয়ে করলে বাবা মাও খুশি হবে।

        পড়াশোনায় ভালো হবার দরুন চাকরি পেতে খুব একটা অসুবিধা হয়নি শ্রীতমার। কলেজ শেষ করার কয়েক মাস পরেই একটা বেসরকারি কোম্পানিতে উঁচু পদে চাকরি পায় সে। আর তারপর বাবা মা দেখাশোনা শুরু করে। পছন্দ মতো ছেলেও পাওয়া যায়।

ছেলের নাম কৌশিক। কৌশিক সরকারি চাকরি করে। তাই এক কথায় রাজি হয়ে যায় শ্রীতমার পরিবার। দেখাশোনার এক মাসের মধ্যেই বিয়ে হয়ে যায় দুজনের। তাই দুজন দুজনকে চেনার, জানার সময় পায়নি বেশি। শ্রীতমা ভেবেছিল যে বিয়ের পর চেনা জানার বিষয়গুলো হবে না হয়।

        কিন্তু বিয়ের কিছুদিন পর থেকেই ভুল ভেঙে যায় তার। সে বুঝতে পারে যে কৌশিকের মন শুধুমাত্র শ্রীতমার নয়। দুজনেই সকালে বেরিয়ে যায় চাকরি করতে, ফেরে সন্ধ্যের পর। কিন্তু তারপরেও কৌশিক খুব একটা গল্প করেনা শ্রীতমার সাথে।

সে ব্যস্ত থাকে নিজের ফোন নিয়ে আর মাঝে মধ্যে মুচকি মুচকি হাসতে থাকে। শ্রীতমার খুব খারাপ লাগে ব্যাপারটা। ভালোবাসা তো অনেক দুরের কথা। তাদের মধ্যে সামান্য আলাপ, গল্প, সুখ দুঃখের কথাও হয়না।

একদিন রাতে শ্রীতমা যখন প্রায় ঘুমের মধ্যে চলে গেছে ঠিক তখন ফোনটা বেজে ওঠে কৌশিকের। শ্রীতমার ঘুম ভেঙে যায়, কিন্তু সে ঘুমানোর অভিনয় করে। কৌশিক অতি সাবধানে ফোনটা তুলে ফিসফিস করে কথা বলে। শ্রীতমার সন্দেহ সত্যি হয়।

কৌশিক প্রেম করে! শ্রীতমার নিজের উপর রাগ হয়, ঘেন্না হয়। তারপর মনে মনে ভাবতে থাকে মা বাবার কথা, মা বাবা এমন একটা ছেলের সাথে তার বিয়ে দিল যে কিনা অন্য একটা মেয়ের সাথে প্রেম করে! তাহলে শ্রীতমা কেন শুধু শুধু সতি সাবিত্রী সেজে জীবন কাটাবে? খুব রাগ হয় শ্রীতমার, জীবনের প্রতি।

        পরের দিন শ্রীতমা অফিস যায়। অফিসের জুনিয়ার ছেলে, নাম শুভজিৎ, শ্রীতমার দিকে তাকিয়ে থাকে হাঁ করে। শ্রীতমা এতদিন সেটা লক্ষ্য করেনি। আজ সে দেখল, তার ভাল লাগলো।

কেন? মেয়েদের কি ভালোবাসা ভাললাগতে নেই? অফিস ছুটির পর শ্রীতমা নিজে শুভজিৎ-এর কাছে গিয়ে কথা বলা শুরু করে। মিনিটের মধ্যেই ছেলেটাকে ভালো লাগতে শুরু করে শ্রীতমার। কারণ তার কথা এইভাবে একমনে কেউ কোনোদিন শোনেনি।

তারপর শুভজিৎকে নিয়ে বাইরে যায় শ্রীতমা। রেস্টুরেন্টে তারা খাওয়া দাওয়া করে, হাসি ঠাট্টা, চোখে চোখে চাহুনি, সবকিছুই হয়। গল্প করতে করতে কখন যে রাত নটা বেজে যায় বুঝতে পারেনা শ্রীতমা। হঠাৎ ঘড়ি দেখে আঁতকে ওঠে সে।

তাঁকে এবার বাড়ি যেতে হবে। যাওয়ার আগে শুভজিৎ হাতটা ধরে শ্রীতমার। শ্রীতমা হাসে। সেই স্পর্শের মধ্যে শ্রীতমা একান্ত নিজস্বতা খুঁজে পায়। মনটা খুশি করে শ্রীতমা বাড়ি ফিরে আসে।

        শ্রীতমা বোঝে যে শুধু সবাইকে খুশি করতে গিয়ে সে যে কখন নিজের খুশি হারিয়ে ফেলেছিল সে বুঝতে পারেনি। নিজের খুশি থাকাটা দরকার, নিজেকে খুশি করাটা দরকার।

জীবনে কাউকে ভালবাসাটা দরকার, সেটা যখনই হোক না কেন, যে কোন বয়সেই হোক না কেন।

Leave a comment