চাইলেই সব কিছু পাওয়া যায় না
যে ছেলেটা পড়ার ভয়ে প্রতিদিন লাস্ট বেঞ্চে বসে থাকতো সে আজ বুয়েট ইন্জিনিয়ার। ছেলেটা বাহিরে থাকে। অনেক পরিশ্রম!
আর একটা হৃদয় স্পর্শ ঘটনা ছেলেটাকে বুয়েট ইন্জিনিয়ার বানিয়ছে।
- “একসময় ক্লাসের খুব খারাপ ছাত্র ছিলো পড়ালে লেখা প্রায় বাদই দিয়েছিলো সারা দিন টুটু করে ঘুরে বেড়াত। হঠাৎ অনেক সুন্দর একটি মেয়ে তার সামনে দিয়ে স্কুলে যাইতেছে।
ছেলেটি মেয়েটির পিছু নেয়। দেখলো ছেলেটি যে স্কুলে পড়ে মেয়েটি ও স্কুলেই পড়ে তার পরের দিন আবার দেখতে পেল মেয়েটি যাচ্ছে।
ছেলেটি চিন্তা করলো আবার সে লেখা পড়া করবে।পরের দিন থেকে সে নিয়মিত স্কুলে যাওয়া শুরু করলো।
তখন ছেলেটি নবম শ্রেণীতে পড়ত ক্লাসে মোট শিক্ষার্থী সংখ্যা ছিলো ৭০জন!
তারমধ্যে ছেলেটি রোল ৬৫!
অবশেষে ফাইনাল পরীক্ষা শেষ হলো!
অর্থাৎ
ছেলেটি এবার দশম শ্রেনীতে উর্ত্তীণ হলো! রোল মাশাল্লাহ সবচেয়ে বেশী ৭০!
হাইস্কুলে খারাপ ছাত্রদের খুব ঘৃণা করা হয়!
সহপাঠী,
বন্ধু বান্ধব,
শিক্ষক শিক্ষিকা সবাই আমাকে খুব ঘৃণা করতো।
কিন্তু ঘৃণা করলে কি হবে। সে তো স্কুলে যায় ঐ মেয়েটির জন্য মেয়েটিকে প্রচন্ড পছন্দ করত , মনে মনে ভালোবেসে ফেলে।
মেয়েটির নাম সাদিয়া।
এই মেয়েটার জন্যেই সে প্রতিদিন স্কুলে যেত!
শুধু একনজর দেখার জন্য।
ওকে দেখলে ছেলেটি কেমনজানি হয়ে যেত! উপস্থিত বুদ্ধি হারিয়ে যেত, হার্টবিট বেড়ে যেত!
একদম অস্বাভাবিক অবস্থা।
বহুবার চেষ্টা করেও সাদিয়াকে তার মনের কথা বলতে পারেনি।
একদিন সাহস করে বলে ফেলল।
- সাদিয়া আমি তোমাকে খুব পছন্দ করি, ভালোবাসি।
মেয়েটা খুব স্বাভাবিকভাবে বললো – তাই?
ছেলেটা অপরাধীর মত বললাম – হুম।
হঠাৎ করে মেয়েটা ছেলেটার গালে একটা থাপ্পড় মারলো। ছেলেটি থমকে গিয়ে ‘হা’ করে চেয়ে রইল।
মেয়েটা বলতে লাগলো, - সাহস কতো!! তোর মত ছেলে আমাকে প্রেম প্রস্তাব দেয়! তুইতো ক্লাসের লাস্ট বয়!
ক্ষ্যাত একটা।
জানিস আমার বাবা আমাকে ইন্জিনিয়ার ছেলের সাথে বিয়ে দিবে! তোর মত লাস্ট বেঞ্চের ছাত্রের সাথে না। ফাযিল কোথাকার…..
আর কখনো আমার সামনে আসবি না।
.
সেদিনযে স্কুল থেকে ছেলেটি বেরিয়েছিলো
আর কখনো ঐ স্কলে যাইনি!!
ময়মনসিংহের ছোট্ট একটি শহর গফরগাঁও!
সেখান
থেকে এসএসসি এবং ইন্টারমিডিয়েট কম্পলিট করে এসএসসিতে গোল্ডেন! এইচএসসিতে গোল্ডেন অবশেষে বুয়েটে চান্স!
আমাদের আরও সুন্দর সুন্দর গল্প ও কবিতা পড়তে এখানে ক্লিক করুন যদি আমাদের সাথে শেয়ার করতে চান তো এখানে ক্লিক করুন
এটাই ছিল ছেলেটির জীবনের সবচেয়ে বড় অনুপ্রেরণা! সেদিন’যে মেয়েটা তার গালে যে থাপ্পড় মেরেছিলো, সেই থাপ্পড় ই আজ তাকেএতো উপরে তুলে দিয়েছে!
ছেলেটি আজও মেয়েটির চিরকৃতজ্ঞ স্বীকার করে (কত বড় মনের অধিকারী হলে ছেলেটি মেয়েটির অপরাধকে কৃতজ্ঞতা স্বীকার করে) যাক!
ছেলেটি কলেজ ফ্রেন্ড আসিফ! ওর কাছে ছেলেটি ফেরেস্তার সমতুল্য! ১মাস আগে যখন
আমেরিকা থেকে ছেলেটি দেশে ফিরলো!
তখন আসিফ এসে তার বাসায় উপস্থিত!
দীর্ঘ ৮বছর পর ওর সাথে ছেলেটি দেখা।
এমন
সময় আসিফ কেঁদে কেঁদে বলছে! – ভাই টাকার অভাবে আমার স্ত্রী মারা যাচ্ছে! প্লিজ আপনি ওকে বাঁচান।
- কি..রে এর মধ্যে বিয়েও করে ফেলেছিস?
যাইহোক কি হইছে তোর বউয়ের?! - একটা অপারেশন করতে হবে! ২লাখ টাকা দরকার।
- আচ্ছা চল……
অতঃপর হাসপাতালে ! তাড়াহুড়োর কারনে টাকা জমা দিয়ে চলে আসে!
তার ১০দিন পর, আবার আসিফ আসলো ছেলটির কাছে! - ভাই আপনাকে আমার সাথে একটু যেতে হবে!
- কোথায়?
- আমার বাসায়।
- কেন?
- আমার স্ত্রী আপনাকে একটু দেখতে চায়।
- কিন্তু আমারতো আজ বেশ কয়েকটা প্রোগ্রাম আছে।
- প্লিজ ভাই……
অবশেষে আসিফের অনুরোধে ওর বাসায় যায় ছেলেটি! খুবই মধ্যবিত্ত পরিবার ওর। সাদামাটা পরিবেশ! খোলা হাওয়া, সবমিলিয়ে ভালোই।
ফ্রেশ হয়ে রুমে আসতেই, ওপাশ থেকে কেউ একজন সালাম দিলো! মনেহয় আসিফের বউ!!
মেয়েটার দিকে চেয়ে সালামের জবাব দিবো, এমন সময় থমকে যায় ছেলেটি ! কারন এই মেয়েটিই তার স্কুলজীবনের ফাস্ট ইমপ্রেশন “সাদিয়া”!!!
যাকে একটাবার দেখার জন্য প্রতিদিন স্কুলে দৌড়ে যেত। যার একটা থাপ্পড়ে আজ ছেলেটি বুয়েট ইন্জিনিয়ার। (মনের মধ্যে মুচকি হাসি)!
লক্ষ্য করলো বালিকার চোখে জল! ছেলেটি স্বাভাবিকভাবেই বললেন, – কাঁদছো কেন? এবার সাদিয়ার চোখ বেয়ে অশ্রুর ঢল নেমেছে!
মেয়েটা হাতজোর করে বলতে লাগলো – প্লিজ তুমি আমাকে মাপ করে দাও।
সাদিয়ার কান্না দেখে ছেলেটির চোখেও অশ্রু চলে আসলো।
ছেলেটি বললো।
- খুব ভালোবেসেছিলাম তোমাকে! তখন
যোগ্যতা ছিলো না তাই পাইনি! আজ যোগ্যতা আছে কিন্তু তুমি নেই।
এটাই বাস্তবতা!
কিছু পেতে হলে কিছু হারাতে হয়…