১. গল্প 👎
রাষ্ট্রপ্রধানের জবাবদিহিতা
মুহাম্মাদ বিন ওবায়দুল্লাহ হ’তে বর্ণিত, তিনি বলেন, একদা দ্বিতীয় খলীফা ওমর (রাঃ)-এর নিকটে কিছু কাপড় আসলে তিনি সেগুলি হকদারগণের মাঝে বণ্টন করে দেন। এতে আমাদের প্রত্যেকে একটি করে কাপড় পেল। কিন্তু তিনি নিজে দু’টি কাপড় দিয়ে তৈরী একটি পোষাক পরিধান করে খুৎবা দিতে মিম্বরে আরোহণ করলেন। কিন্তু শ্রোতাদের অন্যমনস্কতা লক্ষ্য করে তিনি জিজ্ঞাসা করলেন, হে লোকসকল! তোমরা কি আমার কথা শ্রবণ করছ না? এমতাবস্থায় বিখ্যাত ছাহাবী সালমান ফারেসী (রাঃ) উঠে দাঁড়িয়ে বললেন, জি না, আমরা শ্রবণ করব না। ওমর (রাঃ) বললেন, কেন হে আবু আব্দুল্লাহ? তিনি বললেন, আপনি আমাদেরকে একটি করে কাপড় দিয়েছেন। অথচ আপনি পরিধান করেছেন (দুই কাপড়ের) বড় পোষাক ! ওমর (রাঃ) বললেন, ব্যস্ত হয়ো না হে আবু আব্দুল্লাহ! অতঃপর তিনি ছেলে আব্দুল্লাহ বিন ওমর (রাঃ)-এর দিকে ইশারা করলে তিনি উঠে দাঁড়ালেন। অতঃপর ওমর (রাঃ) বললেন, আমি আল্লাহ্র কসম করে জিজ্ঞেস করছি, আমার পোষাকে যে অতিরিক্ত কাপড় রয়েছে, সেটা কি তোমার নয়? আব্দুল্লাহ বিন ওমর (রাঃ) বললেন, জি, আমার । অতঃপর সালমান ফারেসী (রাঃ) বললেন, এখন আপনি বক্তব্য শুরু করুন, আমরা শ্রবণ করব (ইবনুল কাইয়িম, ই’লামুল মুওয়াকেঈন ২/১২৩; ছিফাতুছ ছাফওয়াহ ১/২০৩)।
শিক্ষা : রাষ্ট্রপ্রধান জবাবদিহিতার ঊর্ধ্বে নন। তাঁকে পরকালে যেমন আল্লাহ্র কাছে তাঁর দায়িত্ব সম্পর্কে জবাবদিহি করতে হবে, তেমনি দুনিয়াতেও তিনি জনগণের কাছে দায়বদ্ধ থাকবেন ।
২. গল্প 👎
আমানতদারিতার অনন্য দৃষ্টান্ত
ওমর (রাঃ)-এর খেলাফতকালে ১৬ হিজরীতে মুসলিম সৈন্যদল মাদায়েন জয় করেছে। গণীমতের মাল জমা হচ্ছে। এমন সময় এক ব্যক্তি মহামূল্যবান ধন রত্ম নিয়ে এল। জমাকারী বললেন, এমন মূল্যবান সম্পদ তো আমরা ইতিপূর্বে দেখিনি। তুমি এখান থেকে নিজের জন্য কিছু রেখে দাওনি তো ভাই? লোকটি বলল, “ palailypal, ‘আল্লাহর কসম! যদি আল্লাহর ভয় না থাকত, তাহ’লে আমি কখনোই এ সম্পদ আপনাদের কাছে নিয়ে আসতাম না’। সবাই তার পরিচয় জানতে চাইলে তিনি অস্বীকার করে বলেন, যদি আমি পরিচয় দেই, তাহলে আপনারা আমার প্রশংসা করবেন। অথচ আমি কেবল আল্লাহ্র প্রশংসা করি এবং তাঁর নিকটেই প্রতিদান কামনা করি। এরপর তিনি চলে গেলেন। তখন তার পিছনে একজন লোককে পাঠানো হ’ল এবং জানা গেল যে, তিনি হলেন, আমের বিন আবদে কায়েস (তারীখুত ত্বাবারী
শিক্ষা: আমানতদারিতা মুমিনের অন্যতম বৈশিষ্ট্য। পক্ষান্তরে আমানতের খেয়ানত করা মুনাফিকের অন্যতম লক্ষণ।
৩. গল্প 👎
পাত্রী নির্বাচন
ওমর (রাঃ) জনসাধারণের সঠিক অবস্থা জানার জন্য রাত্রিতে ঘুরে বেড়াতেন । এক রাতে একটি ছোট কুটিরের সামনে এলে তিনি বাড়ীর ভিতরের কথাবার্তা শুনতে পেলেন। মা মেয়েকে আদেশ করছেন, ‘দুধের সাথে পানি মিশাও। ভোর হয়ে এল। মেয়েটি উত্তর দিল, ‘না মা, ওমর (রাঃ) দুধে পানি মিশাতে নিষেধ করেছেন। তিনি জানতে পারলে শাস্তি দিবেন’। মা বললেন, ‘ওমর দেখতে পেলে তো? মেয়ে বলল, ‘আমি প্রকাশ্যে তাঁর আনুগত্য করব, আর গোপনে তাঁর অবাধ্যতা করব? আল্লাহ্র কসম! এটা আমার পক্ষে মোটেই সম্ভব নয়। অন্য বর্ণনায় এসেছে, সে বলল, ওমর (রাঃ) হয়ত আমাদেরকে দেখছেন না, কিন্তু তাঁর প্রভু তো আমাদেরকে দেখছেন! গোপনে সব শুনে ওমর (রাঃ) বাড়ীটি চিহ্নিত করে ফিরে এলেন। পরে তার ছেলে আছেমের সাথে ঐ মেয়ের বিবাহ দিলেন। তার গর্ভে দু’টি কন্যাসন্তান জন্মগ্রহণ করল, যাদের একজনের গর্ভে ওমর বিন আব্দুল | আযীয (রহঃ)-এর জন্ম হয়েছিল (তারীখু মাদীনাতি দিমাশক ৭০/২৫৩)।
শিক্ষা : পাত্র-পাত্রী নির্বাচনের ক্ষেত্রে অন্যান্য সকল গুণের উপর দ্বীনদারী ও আল্লাহভীরুতাকে প্রাধান্য দিতে হবে।
৪. গল্প 👎
হাক্কুল ইবাদ রক্ষার অনুপম দৃষ্টান্ত
সিরিয়া বিজেতা সেনাপতি আৰু ওবায়দা ইবনুল জাররাহ (রাঃ) যুদ্ধ কৌশল হিসাবে সিরিয়া থেকে আপাততঃ সৈন্যদল পিছিয়ে অন্যত্র চলে যাবার সিদ্ধান্ত নিলেন। ফলে সিরিয়ার খৃষ্টান নেতৃবৃন্দকে ডেকে তিনি তাদের নিকট থেকে গৃহীত জিযিয়া কর ফেরত দিয়ে দিলেন। এতে শহরের আবাল-বৃদ্ধ-বণিতা দলে দলে এসে ক্রন্দন করতে লাগল ও আকুতি-মিনতি করে বলতে লাগল, আপনারাই আমাদের এলাকা শাসন করুন। আমাদের স্বজাতি খৃষ্টান যালেম শাসকদের হাতে আমাদেরকে পুনরায় ন্যস্ত করবেন না। সেনাপতি বললেন, *আপাততঃ আপনাদের নিরাপত্তার দায়িত্ব নেয়া যেহেতু সম্ভব হচ্ছে না, সেহেতু আপনাদের প্রদত্ত জিযিয়া কর আমরা রাখতে পারি না’। হাক্কুল ইবাদ রক্ষার এই অনুপম দৃষ্টান্ত দেখে তারা খুবই আবেগাপ্লুত হয়ে পড়ল (বালাযুরী, ফুতূহুল বুলদান, পৃঃ ১৩৪)।
শিক্ষা : তরবারির মাধ্যমে ইসলাম প্রসার লাভ করেছে- এ ধারণা সর্বৈব নির্জলা মিথ্যা। বরং মুসলমানদের আদব-আখলাক ও জনগণের অধিকার রক্ষায় তাদের সচেতনতাই এ ক্ষেত্রে মুখ্য ভূমিকা পালন করেছে।
৫. গল্প 👎
ওমর বিন আব্দুল আযীয (রহঃ)-এর সাদাসিধে জীবনযাপন
খলীফা ওমর বিন আব্দুল আযীয (রাঃ) আড়াই বছর খেলাফতে থাকার পর মাত্র সাড়ে ৩৯ বছর বয়সে শত্রুদের বিষ প্রয়োগে শাহাদত বরণ করেন। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হ’ল যে, তিনি দুটি বদ্ধ ঘরে সোনা-দানা ভর্তি করে রেখে গিয়েছেন, যার সবই রাষ্ট্রীয় বায়তুল মাল থেকে তিনি আত্মসাৎ করেছেন। পরবর্তী খলীফা ইয়াযীদ বিন আব্দুল মালেক অভিযোগকারীকে সাথে নিয়ে ওমরের বাড়ীতে গিয়ে উক্ত কক্ষ দু’টি খুললেন। দেখা গেল সেখানে আছে কেবল একটি চামড়ার চেয়ার, একটি পিতলের বদনা, ৪টি পানির কলসি। অন্য ঘরে আছে একটি খেজুর পাতার চাটাই, যা মুছাল্লা হিসাবে রাখা হয়েছে। আর আছে ছাদের সঙ্গে ঝুলানো একটি শিকল। যার নীচে গোলাকার একটি বেড়ী রয়েছে, যার মধ্যে মাথা ঢুকানো যায়। ইবাদতে রাত কাটানোর সময় কাহিল হয়ে পড়লে বা ঝিমুনি আসলে এটা তিনি মাথায় ঢুকিয়ে দিতেন, যাতে ঘুমিয়ে না পড়েন। সেখানে একটি সিন্দুক পেলেন, যার মধ্যে একটি টুকরী পেলেন। যাতে ছিল একটি জামা ও একটি ছোট পাজামা। আর তাঁর পরিত্যক্ত বস্তুর মধ্যে তাঁর স্ত্রীর কাছ থেকে পেলেন, তালি দেওয়া একটা জামা ও একটি মোটা জীর্ণশীর্ণ চাদর। এ অবস্থা দেখে খলীফা কেঁদে ফেললেন এবং অভিযোগকারী ভাতিজা ওমর ইবনে ওয়ালীদ ইবনে আব্দুল মালেক লজ্জিত হয়ে বললেন, ‘আসতাগফিরুল্লাহ’। আমি কেবল লোকমুখে শুনেই অভিযোগ করেছিলাম (আল-বিদায়া ওয়ান নিহায়ার ৯/২২৩)।
শিক্ষা : ইসলামী খিলাফতের খলীফাগণ এমনই মহত্তম দৃষ্টান্ত পৃথিবীবাসীর জন্য রেখে গেছেন, যা শত্রু-মিত্র সকলের জন্য এক চিরন্তন শিক্ষা বহন করে।
Your article helped me a lot, is there any more related content? Thanks!
Thanks for sharing. I read many of your blog posts, cool, your blog is very good.
This excellent website truly has all the information I needed about this subject and didn’t know who to ask.
This information is worth everyone’s attention. How can I find out
more?
Attractive section of content. I just stumbled upon your weblog and in accession capital to assert that I
acquire in fact enjoyed account your blog posts.
Anyway I will be subscribing to your feeds and even I
achievement you access consistently fast.
Can you tell us more about this? I’d like to find out some additional information.
I was wondering if you ever considered changing the page layout of your
site? Its very well written; I love what youve
got to say. But maybe you could a little more in the way of content so people could connect with it better.
Youve got an awful lot of text for only having 1 or two images.
Maybe you could space it out better?