ভালোবাসার রোমান্টিক চিঠি পত্র

akhi akter

রোমান্টিক প্রথম ভালোবাসার চিঠি পত্র

একদিন মনীষা একটা চিঠি পেল। এটা ছিল ভালোবাসায় পূর্ণ হাতে লেখা চিঠি। সেই চিঠিতে মনীষাকে কেউ প্রস্তাব দিয়েছে। কিন্তু চিঠিতে ওই ব্যক্তির নাম লেখা নেই।

এত সুন্দর হাতের লেখা কার হতে পারে তার কোনো ধারণাই নেই মনীষার। কার হাতের লেখা এত স্পষ্ট এবং সুন্দর সে কাউকে চেনে না। শুধু হাতের লেখা দেখেই চিঠির প্রেরকের প্রেমে পড়ে মনীষা

মনীষার বিয়ে হয়েছে ছয় মাস হলো। এটা একটা অ্যারেঞ্জড ম্যারেজ ছিল। তার বাবা-মা তার জন্য উপযুক্ত লোক খুঁজে পাওয়ার কয়েক মাসের মধ্যেই মনীষার বিয়ে হয়ে যায়।

তার স্বামীর নাম প্রণব। প্রণবের বড় ব্যবসা আছে। আর মনীষা বাড়ি থেকে একটা ছোট বুটিক চালায়। তাই তারা বেশ ধনী ছিল। বিয়ের ছয় মাস পেরিয়ে গেলেও এখনও স্বামীর সঙ্গে ঠিকমতো মুখ খোলেননি মনীষা।

তার স্বামীর সামনে এখনো একটু লজ্জা লাগে। প্রণবও তাই মনে করেন। তাদের মধ্যে দৈহিক সম্পর্ক থাকলেও একটা দ্বিধাবোধ আছে।

সন্ধ্যায় কাজ থেকে বাড়ি ফেরেন প্রণব। মনীষা তাকে খাবার পরিবেশন করে, তারপর রান্নাঘরে যায়। চিঠির বিষয়ে তিনি প্রণবকে কিছু বলেননি। প্রণব খাবার খেয়ে আবার নিজের কাজে ব্যস্ত হয়ে গেল।

রাতে কাজ সেরে বেডরুমে গিয়ে প্রণবের পাশে শুয়ে পড়ল। ততক্ষণে প্রণব ঘুমিয়ে পড়েছে। মনীষা চিঠির কথা ভাবছিল আর এই প্রথম ওর সাথে এরকম কিছু হল।

পরদিন সকালে প্রণব যথারীতি কাজে গেল। মনীষাও বুটিকের কাজ শেষ করে দুপুরে বাড়ি ফিরে আসে। ঠিক তখনই সে লক্ষ্য করল বালিশের নিচ থেকে একটা কাগজের টুকরো উঁকি দিচ্ছে।

তিনি এটি টেনে বের করে দেখলেন যে এটি আগের দিনটির মতোই একটি নতুন চিঠি। আবার একই সুন্দর হাতের লেখায় একটি প্রেমপত্র। মনীষা খুব অবাক হল।

সে ভাবল চিঠির প্রেরক তার বাড়ির ঠিকানা জানল কী করে? এর মধ্যেও সে মনে মনে খুশি হল। সে ভাবছিল যে তার এইভাবে অনুভব করা উচিত কিনা, বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক করা কি সত্যিই ঠিক আছে।

কিন্তু এক সেকেন্ডের মধ্যেই বুঝতে পারল সে বিবাহিত। সে বুঝতে পারলো তার স্বামীকে এভাবে প্রতারণা করা কতটা অন্যায়। এরপর তিনি সিদ্ধান্ত নেন এবং তার স্বামীকে সব কিছু জানাবেন তিনি কখন বাড়ি ফিরবেন।

সন্ধ্যায় বাড়ি ফেরেন প্রণব। চিঠি দুটো হাতে নিয়ে মনীষা ধীরে ধীরে ভ্রুকুটি করে প্রণবের কাছে গেল। মনীষা বলল-

  • শোন আমার কিছু বলার আছে।
  • কি বলতে চাও বলো? তুমি এত অসাড় কেন?

মনীষা হাতে লেখা দুটি চিঠি তার হাতে দিল। প্রণব সেই চিঠিগুলো নিয়ে জিজ্ঞেস করল-

  • এগুলো কি?

-এগুলো চিঠি। গত কয়েকদিন ধরে কেউ আমাকে এই চিঠিগুলো পাঠাচ্ছে। আমি আপনাকে এই সম্পর্কে আগে বলিনি. কিন্তু আজ সে আমাদের বাসায় এসে বালিশের নিচে রেখে গেছে। আমি চিন্তিত হয়ে পড়েছিলাম তাই এখন বলছি।

  • ধুর, তুমি সব মজা নষ্ট করে দিয়েছ।
  • কি!

প্রণব পকেট থেকে একটা চিঠি বের করল। মনীষা দেখল হুবহু আগের মতই আছে। মনীষা জিজ্ঞেস করল-

সত্যিই? তুমিই কি আমাকে এই চিঠিগুলো পাঠিয়েছিলে?
হ্যাঁ, এই চিঠিটা আমি কাল তোমার ড্রেসিং টেবিলের ড্রয়ারে রেখে দিতাম।

  • কিন্তু, তোমার হাতের লেখা এমন না।
  • আমি বাম হাতে লিখতে পারি ম্যাডাম। এটা আমার বাম হাতের লেখা। আমি তোমাকে বিয়ের আগে বা পরে এসব কথা বলিনি। তাই এই সম্পর্কে আপনার কোন ধারণা ছিল না.

মনীষা প্রণবকে সুখে জড়িয়ে ধরে এবং আজ অবশেষে সে সত্যিকারের ভালবাসা খুঁজে পেয়েছে।

Leave a comment