তোমারেই যেন ভালোবাসিয়াছি -অনন্ত প্রেম – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
অনন্ত প্রেম
– রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
তোমারেই যেন ভালোবাসিয়াছি
শত রূপে শত বার
জনমে জনমে, যুগে যুগে অনিবার।
চিরকাল ধরে মুগ্ধ হৃদয়
গাঁথিয়াছে গীতহার,
- ফ্রিল্যান্সিং কি?কিভাবে ফ্রিল্যান্সিং শুরু করবো?
- ক্রাশ এর সাথে প্রেম
- অসম্পূর্ণ ভালোবাসা | ছোঁয়া লেগেছিল মাএ
- হুমায়ূন আহমেদ স্যারের এর কিছু মজার উক্তি
- সে এসেছিল ,হারিয়ে যেতে – তানিয়া ত্বোহা
কত রূপ ধরে পরেছ গলায়,
নিয়েছ সে উপহার
জনমে জনমে, যুগে যুগে অনিবার।
যত শুনি সেই অতীত কাহিনী,
প্রাচীন প্রেমের ব্যথা,
অতি পুরাতন বিরহমিলনকথা,
অসীম অতীতে চাহিতে চাহিতে
দেখা দেয় অবশেষে
কালের তিমিররজনী ভেদিয়া
তোমারি মুরতি এসে,
চিরস্মৃতিময়ী ধ্রুবতারকার বেশে।
আমরা দুজনে ভাসিয়া এসেছি
যুগল প্রেমের স্রোতে
অনাদিকালের হৃদয়-উৎস হতে।
আমরা দুজনে করিয়াছি খেলা
কোটি প্রেমিকের মাঝে
বিরহবিধুর নয়নসলিলে,
মিলনমধুর লাজে—
পুরাতন প্রেম নিত্যনূতন সাজে।
আজি সেই চিরদিবসের প্রেম
অবসান লভিয়াছে
রাশি রাশি হয়ে তোমার পায়ের কাছে।
নিখিলের সুখ, নিখিলের দুখ,
নিখিল প্রাণের প্রীতি,
একটি প্রেমের মাঝারে মিশেছে
সকল প্রেমের স্মৃতি—
সকল কালের সকল কবির গীতি।
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর একজন উত্কৃষ্ট কবি, সাহিত্যিক এবং সমাজসেবক ছিলেন। তার কবিতা, গান, নাটক এবং উপন্যাসে সাধারণ মানুষের মনে অমর আলো বড় করে তোলে। একেবারেই রবীন্দ্রনাথের শ্রেষ্ঠ উপন্যাস “অনন্ত প্রেম”। এই উপন্যাসে বেশ কয়েক চরিত্র রয়েছে, যারা সবার মধ্যে প্রেমের সত্যিক অর্থ এবং মূল্য নিয়ে চিন্তা করে।
অনন্ত প্রেম উপন্যাসটি রবীন্দ্রনাথের একটি অসাধারণ লেখা যা প্রেমের সমস্ত নানা আয়াম নিয়ে তাকিয়ে আছে। এটি প্রেমের গভীর স্বার্থ এবং নিঃস্বার্থ প্রতিরোধ উঠিয়ে। প্রেমের বিভিন্ন রূপ, তা হচ্ছে নিঃস্বার্থিক প্রেম, যা আনন্দের জন্য প্রেম করে এবং প্রতি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে আলোকিত হয়।
ভালোবাসিয়াছি উপন্যাসের মূল কাহিনীটি একটি প্রেমের গল্প, যেখানে মুকুল ও তরুণির মধ্যে অসাধারণ প্রেমের কাহিনী রয়েছে। তাদের মধ্যে প্রেম এমন একটি শক্তিশালী বাণী বিস্তারিত করে, যা সব মধ্যে অপরিমিত প্রেম এবং আত্মসাক্ষাত্কারের স্বপ্ন বিস্তারিত করে। মুকুল ও তরুণির প্রেম বিষয়ে অনেক চিন্তা করে এবং সাম্প্রদায়িক গোলামল অপেক্ষার বিরুদ্ধে তাদের প্রেমের জন্য লড
়াই করে।
প্রেমের অধিকার: রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের উপন্যাসে প্রেমের অধিকারের বিষয়ে গভীর চিন্তা বিস্তারিত করা হয়েছে। মুকুল ও তরুণির মধ্যে সৃষ্টিকারী প্রেম যে প্রতিরোধ উঠিয়ে, সে প্রেম দুঃখের মূল কারণ হিসেবে উঠে। প্রেমের অধিকারের জন্য লড়াই একটি নিয়মিত বিষয় এবং তার মাধ্যমে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর মানবীয় মূল্যের উচ্চতা উজ্জ্বল করেন।
বৈয়ক্তিক বিকাশ: উপন্যাসটি মুকুল ও তরুণির চরিত্র উপর কেন্দ্রিত করা হয়েছে, যা মানুষের মধ্যে প্রেম এবং সমাজের সামাজিক ও রমণীয় মূল্য নিয়ে গভীরভাবে চিন্তা ও বিচারে পরিণত হয়।
সমাপ্তি: উপন্যাসের শেষে, প্রেমের জন্য সব বিপর্যয় এবং মুকুল ও তরুণির সমস্যার মধ্যে অবস্থান করা হয়, যার ফলে তারা সমস্ত চায়ের সঙ্গে পরিচিত হয়। এই উপন্যাস একটি সুন্দর উপন্যাস, যা প্রেমের অধিকার এবং সামাজিক মানবিক মূল্যের উপর গভীর বিচার করে।
অনন্ত প্রেম রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের একটি স্মরণীয় উপন্যাস, যা প্রেমের বিভিন্ন আয়াম এবং প্রেমের মহান শক্তি উজ্জ্বল করে। এটি মানুষের মধ্যে অমর প্রেমের ভাবনার মহাকাব্য।
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, প্রেমের কবি। তাঁর লেখনীতে প্রেম কখনও সীমিত ছিল না, বরং তা ছিল অজস্র, অনন্ত, অপরিমেয়। কবিগুরুর প্রেমের ভাবধারা শুধু মানসিক নয়, তা আত্মার গভীরে গিয়ে ঠেকেছে। তাঁর বিখ্যাত লাইন, “তোমারেই যেন ভালোবাসিয়াছি,” এই চিরন্তন প্রেমেরই বহিঃপ্রকাশ।
কবিতার প্রতিটি পংক্তিতে লুকিয়ে আছে প্রেমের অসীমতা। এই প্রেম কোনও ব্যক্তি বা নির্দিষ্ট সম্পর্কের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়, বরং তা প্রকৃতি, সৃষ্টিকর্তা, এবং মহাজাগতিক শক্তির প্রতি সমর্পিত। তাঁর প্রেমের প্রকাশ অন্যধারার, যেখানে প্রেমের অর্থ নিছক রোমান্স নয়, তা হল মানবাত্মার শুদ্ধতা।
রবীন্দ্রনাথের লেখায় প্রেম যেন এক ধরনের অনন্ত প্রেম। এই প্রেম কোনদিন শেষ হয় না, এর কোনও পরিসমাপ্তি নেই। তাঁর কাব্যের প্রেম একদিকে যেমন আনন্দে পূর্ণ, তেমনই তা বেদনার গভীরে নিমজ্জিত। রবীন্দ্রনাথ বারবার বুঝিয়ে দিয়েছেন, প্রেম মানে শুধু কাছে থাকা নয়, প্রেম মানে অনুভব করা, প্রেম মানে সবকিছুর ঊর্ধ্বে গিয়ে ভালোবাসা।
যখন তিনি লিখলেন, “তোমারেই যেন ভালোবাসিয়াছি,” তখন সেই প্রেম কোনও একক ব্যক্তি নয়, বরং একটি সর্বব্যাপী শক্তির প্রতি নিবেদিত। সেই প্রেমের মধ্যে মিশে আছে সৃষ্টির প্রতি এক গভীর মমতা, একটি আত্মিক সম্পর্কের জন্ম। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের প্রেম মানবজীবনের সমস্ত দুঃখ-কষ্ট, আশা-নিরাশা, সুখ-দুঃখের সমন্বয়ে তৈরি।
অনন্ত প্রেম, অর্থাৎ এই প্রেম কোনও নির্দিষ্ট সময় বা স্থানে সীমাবদ্ধ নয়। এই প্রেমের কোনও দেশকাল নেই, এটি অসীম, চিরন্তন। তাঁর কাব্যে প্রেম যেন এক আধ্যাত্মিক অভিজ্ঞতা, যা আমাদের প্রতিদিনের জীবনে প্রবাহিত হয়। এই প্রেম কেবল শারীরিক বা মানসিক আবেগ নয়, এটি আমাদের আত্মার গভীরতম ইচ্ছা ও আকাঙ্ক্ষা।
রবীন্দ্রনাথের এই প্রেমের ধারণা এমনই একটি শক্তিশালী বার্তা, যা যুগ যুগ ধরে মানুষকে প্রভাবিত করে আসছে। তাঁর প্রতিটি কবিতা, প্রতিটি গানে, প্রেমের এই অনন্ত ধারা বয়ে চলেছে। তিনি শুধু প্রেমিক-প্রেমিকার প্রেম নয়, বন্ধুত্ব, পিতৃত্ব, মাতৃত্ব এমনকি মানবতাবাদের প্রেমের কথাও বলেছেন। তাঁর প্রেমের দর্শন মানবাত্মার মুক্তির পথে নিয়ে যায়।
সবশেষে, বলতে হয়, তোমারেই যেন ভালোবাসিয়াছি একটি লাইন নয়, এটি একটি আবেগ, একটি চিরন্তন অনুভূতি যা প্রজন্ম থেকে প্রজন্মের মাঝে প্রেমের গুরুত্ব ও গভীরতা অনুভব করায়। এই প্রেম হল অনন্ত, এটি কোনওদিন শেষ হয় না, বরং আমাদের জীবনের প্রতিটি মুহূর্তে নতুন করে প্রস্ফুটিত হয়।
রবীন্দ্রনাথের প্রেমের ভাবধারা আজও প্রাসঙ্গিক, তার কবিতা, গান ও লেখায় প্রেমের অনন্ত শক্তি প্রকাশ পেয়েছে, যা আমাদের মানসিক ও আত্মিক মুক্তির দিকে নিয়ে যায়।