রোমান্টিক ভালোবাসার গল্প – পিচ্চি তুই শুধু আমার
আমি গিয়ে দরজায় টোকা দিয়ে বললাম আমি আরহাম আর কিছুক্ষনের মধ্যে দরজা খুলে দিলো।ভেতরে একদম অন্ধকার আমি ভেতরে গিয়ে ওকে ডাকলাম হঠাৎ রাফা আমায় জড়িয়ে ধরলো।আমি বুঝতে পারলাম রাফা কাদছে।
.
ওর থেকে ছাড়িয়ে নিতে চাইলে এবার রাফা বেশ শব্দ করেই কেদে আমাকে আরো শক্ত করে জড়িয়ে ধরলো।হঠাৎ করে আবার জোড়ে চেপে ধরায় আমি বিছানায় পড়ে গেলাম রাফা তবুও আমাকে ছাড়ছে না।আমার উপরে শুয়ে শক্ত করে জড়িয়ে কাদছে।ওকে কোনো রকম শান্ত করে নিজেকে ওর থেকে ছাড়িয়ে ঘরে আগে লাইট দিয়ে আলো জালালাম।
-খাসনি কেন?
আমি ওকে জিজ্ঞেস করলাম কিন্তু আমার কথার উত্তর না দিয়ে চুপ করে মাথা নিচু করে বসে আছে।আমি এবার ওর সামনে গিয়ে ওর সামনে হাটু গেরে বসে ওর থুতনি ধরে ওর মাথা উচু করে ওকে আমার চোখের দিকে মুখ তুললাম।ও আমার দিকে তাকাতেই পারছেনা।বুঝলাম ওর মধ্যে অপরাধ বোধ টা খুব কাজ করেছে।ওকে ঠিক করতে আমি নিচে গিয়ে খাবার নিয়ে আসলাম।
-হা কর।(একটু কড়া ভাবে বলায় রাফা বাধ্য মেয়ের মতো হা করলো)
-শোন যা হইছে সব ভুলে যা মনে করবি এসব দুঃস্বপ্ন এছাড়া কিছু না।আর আমার কাছে তোর এতো অপরাধী হওয়া লাগবে না।আমি তোর ভালোর জন্য সব করেছি আগে না বুঝলেও সময় থাকতে বুঝেছিস ব্যাস।এখন সুন্দর ভাবে শুরু কর সবকিছু।
.
এবার যেন রাফা মনে সাহস ফিরে পেলো।এতোক্ষন খাইয়ে দিতে জোর করতে হচ্ছে না।রাফা চুপচাপ খেয়ে নিলো।আমি ওকে খাইয়ে দিয়ে চলে আসতে যাবো ওমনি রাফা আমার হাত চেপে ধরলো।
.
-কোথায় যাচ্ছো?
-নিচে যাই।
-কেন??
-আরে নাঈমা খেলার জন্য অনেকক্ষন বসে আছে।
-আমার কাছে থাকো প্লিজ।
.
রাফা ছলছল চোখে আমার দিকে তাকালো কি করবো বুঝতে পারছিলাম না।আমি ওকে হাত ধরে টেনে নিচে নিয়ে গেলাম।নাঈমা তো খুব খুশি যে তার বড় আপু তার সাথে আজ খেলবে।কেননা এর আগে রাফা কখনো নাঈমার সাথে মিশেনি বরাবর নাঈমা গেলেই রাফার ঝাড়ি শুনতে হয়েছে।
.
সেদিন সবাই খুব মজা করলাম কেননা একসময় গিয়ে বড় আম্মুও যোগ দিয়েছিলো আমার সাথে।না চাইতেই খুব ভালো একটা সময় কাটানো হলো সেদিন।তবে যদিও তাদের খুশি করতে বার বার আমিই সবার শেষ হয়েছি ইচ্ছে করেই।বড় আম্মু না খাইয়ে ছাড়লো না তাই খেয়ে এসে দিলাম এক ঘুম।
.
পরেরদিন ঘুম ভাঙতে দেরী হলে উঠেই তাড়াহুড়ো শুরু করে দেই।কেননা মোবাইলে হাত দিয়ে দেখি অনেক গুলো ফোন আসছে বুঝলাম আজ কিছু একটা মিস করেছি।তাড়াহুড়ো করে না খেয়েই চলে গেলাম ভার্সিটিতে।ক্যাম্পাসে গিয়ে বসতেই নিধি হাজির।
.
-এই যে তোমার এখন আসার সময় হলো?
-কেন?
-কতোকিছু হয়ে গেছে মানে?
-তুমি এতোক্ষন কই ছিলো বলো আগে?
-আরে ঘুম ভাঙ্গতে দেরী হয়ে গিয়েছে তার আগে বলো কি হয়েছে?
-স্যার সবাইকে নিয়ে পাহাড়ে যাবে ভ্রমনে।
-বাহ তাহলে তো খুব ভালো।
-হুম তুমি যাচ্ছো তো?
-দেখা যাক।
-না দেখা যাক না তোমাকে যাইতেই হবে।
-আচ্ছা আগে সনয় ঠিক হোক তারপর দেখা যাবে।
-আচ্ছা চলোনা দুজন একটু হেটে কথা বলি এখানে বসে থাকতে ভালো লাগছেনা।
-এখন হাটবে??
-হুম চলোনা প্লিজ।
-আচ্ছা ঠিক আছে চলো তাহলে।
.
আমি আর নিধি দুজন হাটবো এমন সময় রাফা চলে আসলো।নিধি আর আমি থেমে গেলাম।
.
-আরহাম??
-হুম বল?
-একটু আসবে প্লিজ কিছু দরকার ছিলো তোমার সাথে।
-আচ্ছা ঠিক আছে চল।এই নিধি তোমার সাথে পরে কথা হচ্ছে কেমন??
-সমস্যা নেই যাও।
.
আরহামকে হাসি মুখে যেতে বললেও নিধি রাগে জ্বলতে থাকে ভেতরে।
.
-বার বার শুধু এমন কেন হয়।আমার আর সহ্য হচ্ছেনা মনে হচ্ছে সবটাকে মেরে আমি নিজেও মরে যাই।
.
নিধি রাগে ফুলতে ফুলতে কথা গুলো বলতে বলতে আবার নিজেকে ঠান্ডা করে নেয়।এদিকে আমি আর রাফা হাঠতে হাঠতে এক জায়গায় গিয়ে বসলাম।
.
-আসলে তোমার থেকে একটা হেল্প লাগবে।
-কি??
-রবিন এর কাছে আমার কিছু পিক ছিলো ওগুলো প্লিজ ওর মোবাইল থেকে ডিলিট করিয়ে দেওয়ার ব্যাবস্থা করো প্লিজ।
-আচ্ছা ঠিক আছে।
-রাতে কিন্তু জানাবা কি হলো আমি খুব টেনশনে থাকবো কিন্তু??
-আচ্ছা ঠিক আছে ভাবিস না তুই।
.
রাফা কিছুটা সাহস পেলো এবার আমি রোহান আর রবির কাছে গেলাম।খুব সুন্দর ভাবে দুজনকেই পেয়ে গেলাম।
.
-মামা পাহাড় যাই চলো।
-হুম যাবো তার আগে আমার একটা কাজ তোদের করে দিতে হবে।
-রবি রোহান তোরা দুজনেই তো জানিস রবিন এর ব্যাপারে?
-হুম জানি।
-ওর মোবাইলে রাফার কিছু ছবি আছে সেটা ওর মোবাইল থেকে আর ওর মন থেকে ডিলিট করতে হবে।
-ওকে বস কাজ হয়ে যাবে তার আগে কথা দিতে হবে এবার ট্যুরে যাবি।
-আচ্ছা ঠিক আছে যাবো যা।
.
ওদের সাথে আড্ডা দিয়ে কোনো রকমনাম মাত্র ক্লাস করে বাসায় ফিরে আসলাম।বিকেলের মধ্যেই ওরা সুখবর দিয়ে দিলো যে কাজ হয়ে গিয়েছে।আমি বিকেলে আজ আর বাহিরে না গিয়ে একটা ঘুম দিয়ে সন্ধ্যায় উঠলাম।একবার ভাবলাম নাঈমাকে আজ পড়াবোনা আবার ভাবলাম যাই পড়িয়ে আসি।
.
বাহিরে বের হয়েছি সন্ধ্যা হওয়ায় অন্ধকার হয়েছে নাকি অনেক মেঘের কারনে অন্ধকার হয়েছে বুঝতে পারলাম না।এতোটুকু বুঝলাম অনেক বৃষ্টি হবে।ওদের বাসায় গিয়ে নাঈমাকে পেলাম না।বড় আম্মুকে জিজ্ঞেস করলাম বললো এতোক্ষন আমার জন্য নাকি বসে ছিলো তারপর আর জানে না।
.
আমি ততোক্ষনে রাফাকে ওর খবরটা দিতে গেলাম। গিয়ে দেখি সেও রুমে নাই তবে যখনই ফিরবো টেবিলে একটা বই দেখে চোখ আটকে গেলো।কাছে গিয়ে ওটা কে বই ভেবে ভুল করলেও ওটা একটা ডায়েরি।আর ডায়েরির উপর সুন্দর করে লিখা ইউ আর মাই এভরিথিং। ডায়েরিটা খুলবো ওমনি পেছন থেকে নাঈমা ডাক দিলো।
.
হটাৎ জোরে একটা বজ্রপাত হলো আর তখুনি বিদ্যুৎ সাথে সাথে চলে গেলো পিচ্চি এক দৌড়ে এসে আমায় আকষ্টে পিষ্টে জড়িয়ে ধরলো,,,,,,,,,,