রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের প্রেমের উক্তি, Rabindranath love quotes…

akhi akter

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের প্রেমের উক্তি, Rabindranath love quotes…

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, যিনি বিশ্বকবি নামে পরিচিত, প্রেমের এক অনন্য ভাষ্যকার। তাঁর লেখনীতে প্রেমের গভীরতা, মাধুর্য এবং মানবিকতা প্রকাশিত হয়েছে অসাধারণভাবে। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের প্রেমের উক্তি গুলি আমাদের হৃদয়কে ছুঁয়ে যায় এবং প্রেমের নতুন দৃষ্টিভঙ্গি উপহার দেয়।

প্রেমের উক্তি: প্রেমের মাধুর্য

রবীন্দ্রনাথের প্রেমের উক্তি গুলি প্রেমের গভীরতা এবং অনুভূতির মাধুর্য প্রকাশ করে। তিনি প্রেমকে জীবনের অমূল্য অভিজ্ঞতা হিসেবে দেখেছেন।

“প্রেমের স্পর্শে সকলেই কবি হয়ে যায়।” – এই প্রেমের উক্তি তে কবি প্রেমের মাধুর্য ও সৃষ্টিশীলতার মেলবন্ধন তুলে ধরেছেন। প্রেমের সংস্পর্শে মানুষ অনুপ্রাণিত হয় এবং তার হৃদয়ে নতুন নতুন সৃষ্টিশীলতার ভাবনা জাগ্রত হয়।

প্রেমের উক্তি: নিবেদন ও আত্মসমর্পণ

রবীন্দ্রনাথের প্রেমের উক্তি গুলি প্রেমের নিবেদন এবং আত্মসমর্পণের গভীরতা ব্যক্ত করে। প্রেম শুধুমাত্র আনন্দ নয়, এতে রয়েছে গভীর আত্মার মেলবন্ধন।

“ভালোবাসার মানুষের চোখের জলে যে স্নেহ থাকে, তা অন্য কিছুতে নেই।” – এই প্রেমের উক্তি তে ভালোবাসার মমতা এবং ত্যাগের মাধুর্য ফুটে উঠেছে। প্রিয়জনের জন্য স্নেহ এবং ত্যাগের মানসিকতা প্রেমের প্রকৃত রূপ।

প্রেমের উক্তি: বিরহের অনুভূতি

রবীন্দ্রনাথের প্রেমের উক্তি গুলি বিরহের বেদনাকে গভীরভাবে অনুভব করতে সাহায্য করে। বিরহের কষ্ট এবং তার মাঝে লুকিয়ে থাকা প্রেমের মাধুর্য তিনি সুন্দরভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন।

“যদি আর বাঁশি না বাজে, আমি কেমন করে থাকি।” – এই প্রেমের উক্তি তে বিরহের ব্যথা এবং নিঃসঙ্গতার অনুভূতি প্রকাশিত হয়েছে। প্রেমিক-প্রেমিকার বিচ্ছেদে হৃদয়ের যে শূন্যতা তৈরি হয়, তা এই উক্তিতে স্পষ্ট।

প্রেমের উক্তি: চিরন্তন ভালোবাসা

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের প্রেমের উক্তি গুলি চিরন্তন ভালোবাসার কথা বলে। প্রেম কখনও পুরানো হয় না, এটি চিরকাল তাজা এবং মধুর থাকে।

“আমার এ গান চিরদিন তোমাদেরই জন্য।” – এই প্রেমের উক্তি তে প্রেমের চিরন্তনত্ব প্রকাশিত হয়েছে। প্রেম এবং সৃষ্টির প্রতি কবির গভীর নিবেদন চিরকাল প্রিয়জনের জন্য উৎসর্গিত।


যুক্তির একটা ব্যাকরণ আছে, অভিধান আছে, কিন্তু আমাদের রুচির অর্থাৎ সৌন্দর্যজ্ঞানের আজ পর্য্যন্ত একটা ব্যাকরণ তৈয়ারি হইল না। তাহার প্রধান কারণ, সে আমাদের হৃদয়ের মধ্যে নির্ভয়ে বাস করিয়া থাকে

– রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

চিরকাল কোন্‌ জিনসটা থাকবে না – থাকবে তা কেউ বলতে পারে না এবং আমিও সে সমন্ধে কোনোরকম তর্কবিতর্ক করতে চাই নে – নিজের মনের ভিতরে যখন একটা সফলতার আনন্দ অনুভব করা যায় সেইটেই লেখকের পক্ষে যথার্ত অমরতা। দুর্ভাগ্যক্রমে সে আনন্দ খুব ভালো লেখক থেকে খুব খারাপ লেখক পর্য – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

পৃথিবীতে বালিকার প্রথম প্রেমেরমত সর্বগ্রাসী প্রেম আর কিছুই নাই। প্রথম যৌবনে বালিকা যাকে ভালোবাসে তাহার মত সৌভাগ্যবানও আর কেহই নাই। যদিও সে প্রেম অধিকাংশ সময় অপ্রকাশিত থেকে যায়, কিন্তু সে প্রেমের আগুন সব বালিকাকে সারাজীবন পোড়ায়। – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

আমার প্রিয়তম জীবন, আমি জানি তুমি চিরকাল আমার নও; কিন্তু এই মুহূর্তের জন্য হলেও আমাকে ভালোবাসো। এর পর আমি সেই বনে উধাও হয়ে যাব যেখানে তুমি আমাকে ফেলেছ, আমি আর কারো কাছে কিছু চাইব না। আমাকে এমন কিছু দিন যা আমার মৃত্যু পর্যন্ত স্থায়ী হতে পারে। -রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

সহজ মানুষের সত্যটি সামাজিক মানুষের কুয়াশায় ঢেকে রেখে দেয় । অর্থাৎ আমরা নানা অবান্তর তথ্যের অস্বচ্ছতার মধ্যে বাস করি । শিশুর জীবনের যে সত্য তার সঙ্গে অবান্তরের মিশেল নেই । তাই, তার দিকে যখন চেয়ে দেখবার অবকাশ পাই তখন প্রাণলীলার প্রত্যক্ষ স্বরূপটি দেখি ; তাতে সংস্কারভারে পীড়িত চিন্তাক্লিষ্ট মন গভীর তৃপ্তি পায় ।” —— পশ্চিম-যাত্রীর ডায়ারি

কবিদিগকে আর কিছুই করিতে হইবে না , তাঁহারা কেবল সৌন্দর্য্য ফুটাইতে থাকুন —জগতের সর্ব্ত্র যে সৌন্দর্য্য আছে তাহা তাঁহাদের হৃদয়ের আলোকে পরিস্ফুট ও উজ্জ্বল হইয়া আমাদের চোখে পড়িতে থাকুক , তবেই আমাদের প্রেম জাগিয়া উঠিবে, প্রেম বিশ্বব্যাপী হইয়া পড়িবে ।

জ্ঞানে প্রেমে অনেক প্রভেদ । জ্ঞানে আমাদের ক্ষমতা বাড়ে , প্রেমে আমাদের অধিকার বাড়ে । জ্ঞান শরীরের মত , প্রেম মনের মত । জ্ঞান কুস্তি করিয়া জয়ী হয় , প্রেম সৌন্দর্য্যের দ্বারা জয়ী হয় । জ্ঞানের দ্বারা জানা যায় মাত্র , প্রেমের দ্বারা পাওয়া যায় । জ্ঞানেতেই বৃদ্ধ করিয়া দেয় , প্রেমেতেই যৌবন জিয়াইয়া রাখে । জ্ঞানের অধিকার যাহার উপরে তাহা চঞ্চল , প্রেমের অধিকার যাহার উপরে তাহা ধ্রুব । জ্ঞানীর সুখ আত্মগৌরব-নামক ক্ষমতার সুখ , প্রেমিকের সুখ আত্মবিসর্জ্জন-নামক স্বাধীনতার সুখ ।

পৃথিবীর চারি দিকে দেয়াল , সৌন্দর্য্য তাহার বাতায়ন । পৃথিবীর আর সকলই তাহাদের নিজ নিজ দেহ লইয়া আমাদের চোখের সম্মুখে আড়াল করিয়া দাঁড়ায় , সৌন্দর্য্য তাহা করে না —সৌন্দর্য্যের ভিতর দিয়া আমরা অনন্ত রঙ্গভূমি দেখিতে পাই ।

ছেলে যদি মানুষ করিতে চাই , তবে ছেলেবেলা হইতেই তাহাকে মানুষ করিতে আরম্ভ করিতে হইবে , নতুবা সে ছেলেই থাকিবে , মানুষ হইবে না । শিশুকাল হইতেই কেবল স্মরণশক্তির উপর সমস্ত ভর না দিয়া সঙ্গে সঙ্গে যথা পরিমাণে চিন্তাশক্তি ও কল্পনাশক্তির স্বাধীন পরিচালনার অবসর দিতে হইবে ।

মহান প্রশান্তি, উদার বিচ্ছিন্নতা, নিঃস্বার্থ ভালবাসা, স্বার্থহীন প্রচেষ্টা: এইগুলিই জীবনে সাফল্যের জন্য তৈরি করে। আপনি যদি নিজের মধ্যে শান্তি খুঁজে পান এবং আপনার চারপাশে স্বাচ্ছন্দ্য ছড়িয়ে দিতে পারেন তবে আপনি একজন সম্রাজ্ঞীর চেয়ে বেশি সুখী হবেন। -রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

আমি আমার দেশের সেবা করতে ইচ্ছুক, কিন্তু আমার উপাসনা আমি সেই অধিকারের জন্য সংরক্ষণ করি যা আমার দেশের চেয়ে অনেক বেশি। আমার দেশকে দেবতা হিসেবে পূজা করা মানেই এর ওপর অভিশাপ আনা।” -রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

মানুষের দেবতা মানুষের মনের মানুষ , জ্ঞানে কর্মে ভাবে যে পরিমাণে সত্য হই সেই পরিমাণেই সেই মনের মানুষকে পাই –অন্তরে বিকার ঘটলে সেই আমার আপন মনের মানুষকে মনের মধ্যে দেখতে পাই নে । মানুষের যত-কিছু দুর্গতি আছে সেই আপন মনের মানুষকে হারিয়ে, তাকে বাইরের উপকরণে খুঁজতে গিয়ে , অর্থাৎ আপনাকেই পর করে দিয়েছে ।

মানুষের প্রতি বিশ্বাস হারানো পাপ , সে বিশ্বাস শেষ পর্যন্ত রক্ষা করব । আশা করব, মহাপ্রলয়ের পরে বৈরাগ্যের মেঘমুক্ত আকাশে ইতিহাসের একটি নির্মল আত্মপ্রকাশ হয়তো আরম্ভ হবে এই পূর্বাচলের সূর্যোদয়ের দিগন্ত থেকে । আর-একদিন অপরাজিত মানুষ নিজের জয়যাত্রার অভিযানে সকল বাধা অতিক্রম করে অগ্রসর হবে তার মহৎ মর্যাদা ফিরে পাবার পথে । মনুষ্যত্বের অন্তহীন প্রতিকারহীন পরাভবকে চরম বলে বিশ্বাস করাকে আমি অপমান মনে করি ।

যে পাখির ডানা সুন্দর ও কণ্ঠস্বর মধুর তাকে খাঁচায় বন্দী করে মানুষ গর্ব অনুভব করে; তার সৌন্দর্য সমস্ত অরণ্যভূমির , এ কথা সম্পত্তিলোলুপরা ভুলে যায় । মেয়েদের হৃদয়মাধুর্য ও সেবানৈপুণ্যকে পুরুষ সুদীর্ঘকাল আপন ব্যক্তিগত অধিকারের মধ্যে কড়া পাহারায় বেড়া দিয়ে রেখেছে। মেয়েদের নিজের স্বভাবেই বাঁধন-মানা প্রবণতা আছে , সেইজন্যে এটা সর্বত্রই এত সহজ হয়েছে ।

প্রেমের ধর্ম এই , সে ছোটোকেও বড়ো করিয়া লয়। আর , আড়ম্বর-প্রিয়তা বড়োকেও ছোটো করিয়া দেখে । এই নিমিত্ত প্রেমের হাতে কাজের আর অন্ত নাই , কিন্তু আড়ম্বরের হাতে কাজ থাকে না । প্রেম শিশুকেও অগ্রাহ্য করে না, বার্ধক্যকে উপেক্ষা করে না , আয়তন মাপিয়া সমাদরের মাত্রা স্থির করে না ।
Leave a comment