অভাগীর সংসার দুঃখ ও আনন্দের সাথে প্রেম এবং সম্পর্কের রহস্য
অভাগীর_সংসার
বিয়ের ৩ বছরের মা*থায় যখন জানতে পারি তার কখনও সন্তান হবে না সে মানুষ টা সারা রাত আমাকে জড়িয়ে ধরে কেঁদেছে।
আমাকে বলেছে আমি যেন তাকে ছেড়ে কোথাও না যায়।।
এবং কথা দিয়েছিলাম যাবো না।
এরপর ভালোই দিন যাচ্ছিলো। শাশুড়ী ও আদর করতো।
কিন্তুু একদিন আমার ভাসুর হঠাৎ ঘুৃমের মধ্যে ব্রেইণ- স্টোক করে মারা যায়।
তারা আলাদা বাড়ি করেছিলো সেখানে থাকতো।
- ভালোবাসার মাঝে ছুটে আসা কোন অনুভুতি
- হুমায়ূন আহমেদ এর অডিও বুক মন ভালো করার উপায়
- প্রেম কিভাবে একটি অলৌকিক ঘটনা? প্রেমের সংকেত গল্প
- আকাশে রোদ উঠেছে হঠাৎ বসন্তের আগমন বসন্তের ছোঁয়া
- ফ্রিল্যান্সিং কি?কিভাবে ফ্রিল্যান্সিং শুরু করবো?
আমার ভাসুর মৃ*ত্যু কালে ১২ বছরের একটি ছেলে এবং ৩ ও ৫বছরের ২ মেয়ে রেখে যায়।
আমার জা ছিলো ভীষণ সুন্দরী এবং ভীষণ অমায়িক ভালো মানুষ ছিলেন৷ তার যে ৩ টা বাচ্চা দেখে বুঝায় যায় তো না।
তাদের সংসার ১৮ বছরের ছিলো।
আমার ভাসুর মারা যাওয়ার পর থেকে মেয়ে ২ টা আমার কাছে থাকতো। এবং বেশির ভাগ সময় আমার জা আমাদের বাড়িতে থাকতো।
আমার শাশুড়ী আগে আমাদের সাথে থাকতো।
ভাসুর মারা যাওয়ার পর কয়েকদিন ওখানে ছিলো।
তারপর জা ও চলে আসে আমাদের বাড়িতে।
বাড়িটা আমার স্বামীর করা ছিলো। আমার শশুর এর জায়গার উপর ১ তলা বাড়ি করেছিলো আমার স্বামী।।
আমার জায়ের মেয়েরা আমার স্বামীকে আগে ছোট বাবা বলে ডাকতো।
এখন শুধু বাবা বলেই ডাকে।।
আমার ভাসুরের মোটামুটি টাকা পয়সা ছিলো। আর্থিক অভাব ছিলো না।
তারপরে ও আমার স্বামী এবং আমি তাদের যথেষ্ট দেখতাম।
ভাসুর মারা যাওয়ার পর থেকে বাচ্চা গুলো আমার স্বামীকে ছাড়া কিছু বুঝতো না।।
আমি বিষয়টা আমলে নিয়ে ও নি নাই।আমার দিন বাড়ির আঙিনায় হাস, মুরগি, গরু, লালন পালন করায় চলে যেত।
আমি ঘরের সব কাজ করতাম৷।
আমার ভাসুর মারা যাওয়ার পর রাতের বেলা আমার স্বামী ভাসুরের মেয়েদের সাথে থাকতো।
কারণ ওরা বাবার জন্য কান্না করতো। তখন আমার বিছানায় এসে ঘুমাতো।
আমার বিছানাটা এত বড় ছিলো না। তখন ওরা দুজন সহ আমার স্বামী খাটে শুয়লে আমি নিচে ঘুমাতাম।
এর কয়েকদিন পর ১২ বছরের ছেলেটা এসে ও আমার স্বামীর সাথে ঘুমাতো।
আমি তখন অন্য রুমে ঘুমাতাম।
এভাবে আস্তে আস্তে দূরত্ব তৈরি হলো।
আমার ভাসুর মারা যাওয়ার বছর খানেক পার হওয়ার পর খেয়াল করলাম আমার শাশুড়ী ও আমাকে তেমন দেখতে পারে না।
সব কিছু তে বড় ভাবী কে প্রাধান্য দেয়।
এবং আমার স্বামী ও আমাকে গুরুত্ব দিতো এবং সময় দিত না সবকিছু তে ভাবী ভাবী করতো।
আমার বড় জা হচ্ছে আমার শাশুড়ীর বোনের মেয়ে। আমার শাশুড়ী তার বোনের মেয়েকে আনছে তার বড় ছেলের জন্য।
আর আমার স্বামী আমাকে পছন্দ করে পারিবারিক ভাবে বিয়ে করছে। এজন্য অবশ্য ১ম ১ম আমার শাশুড়ী আমাকে তেমন পছন্দ করতো না।
ভাসুর মারা যাওয়ার বছর পার হওয়ার পর তারা আবার তাদের বাড়িতে চলে গেল।
সাথে আমার শাশুড়ী ও গেল।
আমি একা হয়ে গেলাম৷ আমার স্বামী বাজার করে দিত। রাতে বেশির ভাগ সময় ওখানে থাকতো।
আমি থাকতে পারতাম না কারণ আমার গবাদী পশু ছিলো।
একটা সময় শুধু সকালে কোন কাজ থাকলে আমার এদিকে আসতো আমার স্বামী এমনি আসতো না।
আমি ও চুপচাপ সহ্য করেছি। কারণ ঝগড়া করলে আরো ঝামেলা হতো এবং মারামারি হতো এখন মাসে ও আসতো না।
তাই আমি ও আর কিছু বলতাম না।
শুধু বুঝতাম মানুষ টা আমার আর নেই।
একদিন আমার শাশুড়ী আর আমার স্বামী বাড়িতে এসে বলে তুমি জানো আমার ছেলের কখনও বাচ্চা হবে না।
আমার বড় ছেলে ও মা*রা গেছে।
আমি চাইছি বড় বউর সাথে আমার ছেলের বিয়ে দিতে সাথে ৩ টা সন্তান পাবে।
আমাকে ৩ লাখ টাকা দিবে আমি যেন চলে যায়।
যদি থাকতে চাই থাকতে পারবো এরকম বললও।
আমি ততদিনে বিষয় টা আন্দাজ করতে পেরেছি এরকম কিছু হবে। আমি আমার স্বামীকে কিছু ই বলিনি কারণ তার সাথে আমার এক আকাশ অভিমান জমা হয়েছিলো।
আমি গরীব এর মেয়ে একটা অসুস্থ মা আছে।
আর ভাই ১ টা আছে বউ নিয়ে থাকে।
আমি জানতাম এখান থেকে চলে গেলে আমার আর বিয়ে হবে না কোন ভালো জায়গায়।
আমি চুপচাপ মেনে নিয়েছি শুধু বুকে ব্যাথা হতো আর কলিজা মোচড়াতো৷ কোন কান্না আসতো না। অনেক কাঁদতে চাইতাম কিন্তুু কান্না আসতো না।।
নামাজের বিছানায় ও কান্না আসতো না।
তারপর আমার স্বামী আমাকে বলে তোমাকে কোন দিন আমি অবহেলা করবো না।
আমি কিছু বলিনী শুধু হেসেছি।
আমার শাশুড়ী একজনকে পাঠায়ছে বাজার থেকে শাড়ী আর কিছু সাজানীর জিনিস কিনে আনার জন্য৷
আমার স্বামী আর শাশুড়ী তারপর চলে যায়।
কারণ পরের দিন তাদের বিয়ে।
ওরা চলে যাওয়ার পর কান্না আসে নাই শুধু আমার গরু ছাগল আর মুরগি গুলো জড়িয়ে ধরতাম একটু পর পর৷
আমার মাকে বিষয় টা বলেছি শুধু মা বলেছিলো মারে একটু সহ্য করে পরে থাক।
কই আসবি বল। তোর ভাইয়ের নুন আনতে পান্তা ফুরায়৷
আমার ভাই বিষয় জানতে পেরে আমার শশুর বাড়িতে আসে আমাকে নিয়ে যেতে।
বলেছে তোকে ভিক্ষা করে খাওয়াবো চল আমার সাথে।
কিন্তুু আমি যায় নি কারণ আমি জানি ওখানের ফিউচার ভালো হবে।
এরপর তাদের বিয়ে হলো। আমার স্বামী এখানে আর তেমন আসে ও না সাপ্তাহে আসে আমার সাথে কথা বলে আমি তেমন কথা বলি না।
কাজের অযুহাত দিয়ে দূরে সরে সরে থাকি। উনি আমার সাথে শারীরিক সম্পর্ক করতে চাইলে বিভিন্ন সমস্যা দেখায়।
তখন রাগ করে চলে যায়।
মাসে,১৫ দিনে ও আসা বন্ধ করে দেয়।
মন চাইলে বাজার পাঠায় না হলে পাঠায় না।
আমি ও কিছু বলি না কারণ গরুর দূধ, ডিম, লাগানো টুকিটাকি সবজি বিক্রি করে আমার পেট চলে।।মাকে ও দিতাম।
ভাইয়ের জন্য পাঠালে ভাই রাগ করতো নিতো না। ভাবিও কথাও বলতো না। শুধু বলতো ১ বেলা কম খায়তাম তাও তোমাকে পালতে পারতাম না।
আমার কেন জানি মনে হতো হয়তো এখন এমন বলছে কিন্তুু একটা সময় ঠিকি আমাকে ভর করবে।
আমার ভাবি এত কষ্ট পেয়েছে এই ঘটনার পর থেকে ১ টা ডিম পাঠালে ও রাখতো না।
কখনও ভালো মন্দ রান্না করলে ভাইয়ের মেয়ের দিয়ে পাঠাতো আমি তৃপ্তি সহকারে খেতাম।
শশুর বাড়ির সবার সাথে আমার দূরত্ব হয়।
যে মানুষ গুলোকে কত আদর করে আপ্যায়ন করে খাওয়াতাম কত ভাব ছিলো সেই মানুষ গুলো এখন আমাকে দেখলে ও কথা বলে না।
খোঁচা মেরে কথা বলে। আমি কেন ডিভোর্স দি না হ্যান ত্যান।
আমার শাশুড়ী আসে না তেমন। তেমন একটা কথা ও বলে না৷
উনাকে মা ডাকতাম কত যে সেবা করেছি উনার।
হায় আফসোস কেউ দুঃখ বুঝে নি।
আমার কান্না আসতো না। শুধু মনে হতো বাপে করে গেছে বেইমানি যে জন্ম দিছে সে করছে বেইমানি আর তোমরা তো বহুত দূরের।।