যা বলব করবে তারপর সব ভালো লাগবে
মা-বাবার অভাব কিভাবে বোঝা যায়~
সোনালীর যখন 5 বছর বয়স তখন ওর বাবা ওকে ওর কাকার বাড়িতে রেখে যায় তখন থেকে সোনালী এখানেই থাকে ওর বাবা ঠিক মত খুজ খবর ও নেই না সোনালী যখন 2 বছর বয়স তখন ওর মা মারা যায় তারপর ওর বাবা আবার বিয়ে করে তখন থেকেই সোনালী নিজেকে মা বাবা ছাড়া সন্তান মনে করে
ও মনে করে ওর আপন কেউ নেই ও সোনালীকে ওর বাবা সোনালীর কাকার বাড়িতে রেখে যায়
সোনালীকে যেদিন প্রথম কাকার বাড়িতে নিয়ে আসে সেদিন ও সোনালীর বাবা যতদিন সোনালীর সাথে ওদের বাড়িতে থাকে ততদিন খুব ভালো ব্যাবহার করেন সোনালীর বাবা 2 দিন তাদের বাড়িতে থেকে তারপর চলে যায় লন্ডন এ সেখানে ওর নতুন স্ত্রীর কাছে আর সোনালীকে দিয়ে যায় কলকাতা সোনালীর কাকার বাড়িতে সোনালীর বাবা তাদের বাড়ির চৌখাট পার হতেই সোনালীর কাকী মা যার নাম শিখা
ওনি সোনালীকে খুব সুন্দর করে ডেকে নিয়ে সোনালীকে বলে তুমি কিসের জন্য এইখানে আসলে অবুঝ সোনালী খুব সুন্দর করেই বলে আমি পড়াশুনা করতে ঠিক তারপরই ওর কাকিমা খুব জোড়ে হাসতে লাগল ও বললো তোমার বাবার যদি পড়ানোর এতই ইচ্ছে ছিলো তাহলে আমাদের বাড়িতে কেনো দিয়ে গেছে ছোট্ট সোনালী বলে আমার মা আমায় আদর করে না আমায় একটু ভালোও বসে না আমার ঐখানে থাকতে ভালো লাগে না
কাকিমা: ও আচ্ছা তাহলে আজ থেকে আমি যা বলব করবে তারপর সব ভালো লাগবে
সোনালী: কি করতে হবে বলো আমায়
কাকিমা: আজ থেকে তুমি তোমার ঐ যে দেখছো নিচের ফ্লোরে ঘরটা ঐখানে তোমার ঠাম্মা থাকে তুমি ওখানেই থাকবে নিজের সমস্ত জিনিস ঐখানে রাখবে ও সকালে উঠে আমার সাথে সমস্ত কাজ করবে আমি না বললে এক পা ও এদিক ওদিক দেবে না আর শুনো এসব কিছু আর কাউকে বলবে না আমি এখন তোমায় যা যা বললাম।।
সোনালি মাথা নিচু করে ঠিক আছে বলে ঠাম্মার ঘরে চলে যায় সেখানে নিজের সমস্ত কিছু গুছিয়ে রাখে ও ঠাম্মার সাথে গল্প করে ঘুমিয়ে পড়ে পরদিন সকাল বেলা
সোনালীর কাকিমা সোনালীকে ডেকে নিয়ে তাকে কাজ করাতে শুরু করে
ঘর মুছা থেকে শুরু করে বাসন ধোয়া সমস্ত কিছু করতে থাকে এসব কাজ শেষ হয়ে গেলে সোনালীকে হাত মুখ ধুয়ে নিতে বলে পরে সোনালী ধোয়ে এসে দেখে বাড়ির সকলে ব্রেকফাস্ট করে নিয়েছে এখন শুধু সোনালী ও তার ঠাম্মা বাকি আছে সোনালীর মনটা খুব খারাপ হয়ে গেলো কারণ এই বাড়িতে সোনালীর আরো 2 জন বোন এই বাড়িতে আছে তারা ওকে কখনো পাত্তাই দেয় না তারপর ও ঠাম্মার সাথে ব্রেকফাস্ট করতে বসবেন বসেও ও ঠিক মতো খেতে পারলেন না কারণ ওর কাকিমা পাও রুটি তে মাখন লাগাতে দেইনি যখনই লাগবে ঠিক তখন এসে নিয়ে যায় মাখন এর ডিবি টা তখন ঠাম্মা বসেনি একটু পরেই ঠাম্মা আসলেন এসে দেখে সোনালীর দুচুখে জল ও কিছু মুখে তুলছে না কারণ ওর খুবই খারাপ লেগেছে ওর কাকিমার এই ব্যাবহার দেখে এমন ভাবে অপমান করবে সে কখনো ভাবেনি আজকের দিনটা যেরকম ভাবে কেটেছে ঠিক তেমনি করে আরো 5 বছর কেটে গেল
এরই মধ্যে সোনালীর মামা খবর পেয়ে সোনালীকে নিতে এসেছে কিন্তু ওর মামা জানত না সোনালীর কাকিমা ওর সাথে এমন ব্যাবহার করে উনি এসে হঠাৎ সোনালীকে দেখে বাসন ধোচ্ছে ঘরের জানালা দিয়ে বাইরে থেকেই দেখা যায় তারপর মামা অনেক ক্ষন চুপ করে থেকে ঘরের ভিতরে যায় ও জোরে সোনালীকে ডাকে সোনালীর মামার এক ডাক শুনে ওর কাকিমা দৌড়ে গেলো সোনালীর কাছে ও হাত মুখ ভালো করে ধুয়ে যেতে বললো ওর মামার কাছে সোনালীও দেরি না করে মামার কাছে ছোটে যায় কাকিমা ও গেলো তখন মামার কাছে গিয়ে সোফায় বসতে বললো মামার হাতে একটা ব্যাগ ছিল সেই ব্যাগ দেখে সোনালী মামাকে জিজ্ঞেস করল কি আছে এতে মামা একটা হাসি দিয়ে বলে এতে আমার সোনালী মায়ের জন্য একটা জামা আছে কিন্তু জানিনা আমার মায়ের পছন্দ হবে কিনা
এইকথা বলে সোনালীর মামা সোনালীকে ব্যাগ টা দিয়ে ওটা খুলে দেখতে বলেন সোনালী ব্যাগ হাতে নিয়ে দেখে ওটার মধ্যে খুব সুন্দর একটি জামা নীল ও সাদা রঙের ফুল আঁকা সোনালী দেখে খুবই খুশি হল
ও দৌড়ে গেল ঠাম্মার ঘরে দেখাতে ও পরতে জামাটা পরে সোনালী ঠাম্মার পরে মামাকে দেখাতে আসে এখানে আসতেই কাকিমা বলে আরেহ সোনালী মা আমার তোমায় তো খুব ভালো লাগছে জামাটা পড়াতে সত্যিই অসাধারণ তারপর কাকিমা মামাকে চা এনে দিলো ও অনেক গল্প করার পর মামা সোনালীর কাকিমা কে বলেন আসলে আমি সোনালীকে নিতে এসেছি কাকিমা মনে মনে বলে ওহ গড হয়তো এইবার একটু শান্তি পাবো এই মেয়েটাকে নিলে তারপর কাকিমা বলে এই কি কথা বলছেন আপনি সোনালী গত 5 বছর হল এখানে আমাদের বাড়িতে আছেন ও কীকরে যাবে এমনিতেও এখন সোনালীর কাকা বাড়িতেও নেই আর ওর ঠাম্মা তো ওকে যেতেই দেবে না এই কথা বললে তখন মামা বলে ঠিক আছে আমি ওর কাকার সাথে কথা বলেই নিয়ে যাবো সোনালীকে এই বলে তখন সোনালীর কাকীমা বলেন সে না হয় দেখা যাবে এখন আপনি একটু রেস্ট করুন এই বলে চলে গেলেন তিনি রান্না করতে ও সোনালীকে বলেন ওর ঠাম্মার সাথেই থাকতে কাকিমা রান্না করতে লাগলো অনেক কিছু তারপরই সোনালীর কাকা ঘরে এসে দেখে সোনালীর মামা এসেছে তখন রান্না শেষ তাই সোনালীর কাকিমা তাদের সবাইকে খাবার জন্য ডাকে ও খাবার দেয় তারপর সোনালীর কাকার সাথে
কথা বলে মামা ঠিক করে সোনালীকে নিয়ে যাবে ওনার সাথে তারপর সোনালীকে নিয়ে মামা চলে যায় তারপর থেকে সোনালীর জীবন অনেকটা সুন্দর হয়ে যায় ও সেখানে মামার বাড়িতেই বড় হতে থাকে।।