দুনিয়ার সবকিছু বরবাদ হয়ে যাক, স্ত্রী-সন্তান, বাবা-মা, পরিবার-পরিজন, ধন-সম্পদ; এমনকি নিজের প্রাণ পর্যন্ত কুরবান হয়ে যাক, তবুও একজন মুমিন কখনো নিজের মহামূল্যবান ইমান বিসর্জন দিতে পারে না। সবার আগে আমাদের ইমান, সবকিছুর আগে আমাদের ইমান। শেষ জমানায় এ ইমান রক্ষা করাটাই হয়ে দাঁড়াবে সবচে বড় চ্যালেঞ্জের বিষয়। আগে বিষয়টি অনেকেই না বুঝলেও পৃথিবীর চলমান রূঢ় বাস্তবতায় ধীরে ধীরে অধিকাংশই এখন বুঝতে শুরু করেছে। সময় গড়ানোর সাথেসাথে বিষয়টি হয়তো আরও বেশি উপলব্ধ হবে। তাই তিমির রাতের অন্ধকারের মতো ফিতনার সময় আসার আগেই আমাদের ইমান নিয়ে সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।আজ থেকে সাড়ে চোদ্দোশ বছর পূর্বেই আল্লাহর রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাদেরকে এমন ফিতনার ব্যাপারে সতর্ক করে দিয়েছেন, যখন মানুষ সকাল-বিকাল ইমানহারা হতে থাকবে। সহিহ মুসলিমের বর্ণনায় এসেছে
:عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ أَنَّ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «بَادِرُوا بِالْأَعْمَالِ فِتَنًا كَقِطَعِ اللَّيْلِ الْمُظْلِمِ، يُصْبِحُ الرَّجُلُ مُؤْمِنًا وَيُمْسِي كَافِرًا، أَوْ يُمْسِي مُؤْمِنًا وَيُصْبِحُ كَافِرًا، يَبِيعُ دِينَهُ بِعَرَضٍ مِنَ الدُّنْيَا‘
আবু হুরাইরা রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, আঁধার রাতের অংশের মতো ফিতনা আসার আগেই তোমরা সৎ আমলের দিকে অগ্রসর হও। সে সময় সকালে কেউ মুমিন থাকলে বিকেলে কাফির হয়ে যাবে কিংবা বিকেলে মুমিন থাকলে সকালে কাফির হয়ে যাবে। দুনিয়ার সামগ্রীর বিনিময়ে সে তার দ্বীন বিক্রি করে দেবে।’ (সহিহু মুসলিম : ১/১১০, হাদিস নং ১১৮, প্রকাশনী : দারু ইহইয়াইত তুরাসিল আরাবিয়্যি, বৈরুত)বিশুদ্ধ সনদে আবু দাউদের বর্ণনায় অতিরিক্ত এসেছে
:عَبْدَ اللَّهِ بْنَ عُمَرَ، يَقُولُ: كُنَّا قُعُودًا عِنْدَ رَسُولِ اللَّهِ، فَذَكَرَ الْفِتَنَ فَأَكْثَرَ فِي ذِكْرِهَا… يُصْبِحُ الرَّجُلُ فِيهَا مُؤْمِنًا، وَيُمْسِي كَافِرًا، حَتَّى يَصِيرَ النَّاسُ إِلَى فُسْطَاطَيْنِ، فُسْطَاطِ إِيمَانٍ لَا نِفَاقَ فِيهِ، وَفُسْطَاطِ نِفَاقٍ لَا إِيمَانَ فِيهِ، فَإِذَا كَانَ ذَاكُمْ فَانْتَظِرُوا الدَّجَّالَ، مِنْ يَوْمِهِ، أَوْ مِنْ غَدِهِ
‘আব্দুল্লাহ বিন উমর রা. বলেন, আমরা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর নিকট বসা ছিলাম। অতঃপর তিনি ফিতনা নিয়ে আলোচনা শুরু করলেন। এসংক্রান্ত আলোচনা অনেক দীর্ঘ করলেন। …সে সময় সকালে কেউ মুমিন থাকলে বিকেলে কাফির হয়ে যাবে। একপর্যায়ে সকল মানুষ দুভাগে বিভক্ত হয়ে পড়বে। একভাগ হবে ইমানের শিবির, যেখানে সামান্য নিফাক থাকবে না। আরেকভাগ হবে নিফাকের শিবির, যেখানে ইমানের লেশমাত্র থাকবে না। পরিস্থিতি যখন এমন হবে, সেদিনই বা পরের দিন তোমরা দাজ্জালের (আবির্ভাবের) অপেক্ষা করো।’ (সুনানু আবি দাউদ : ৪/৯৪-৯৫, হাদিস নং ৪২৪২, প্রকাশনী :
আল-মাকতাবাতুল আসরিয়্যা, বৈরুত)বর্তমান ফিতনার এ মহাদুর্যোগপূর্ণ সময়ে হাদিস দুটি আমাদের জন্য রিমাইন্ডার হিসেবে মুখস্থ রাখা দরকার। বলা তো যায় না, কাকে কখন কী অবস্থার সম্মুখীন হতে হয়। তবে আর যাই হোক না হোক, ইমান বিকিয়ে দুনিয়া ও আখিরাত বরবাদ করার মতো বোকামি করা যাবে না। পাশে কেউ থাকুক বা না থাকুক, ইমান সবার আগে। আর কিছু থাক বা না থাক, ইমান সবকিছুর আগে। সদা মনে রাখতে হবে, শত বিপদ ও মুসিবতে পতিত হলেও আমাদের ইমান সবার আগে, আমাদের ইমান সবকিছুর আগে।
#ilmpractice #বিশুদ্ধ_ইমান_সিরিজ
Thanks for sharing. I read many of your blog posts, cool, your blog is very good.